ইরানের গত শনিবারের ড্রোন এবং মিসাইল হামলার জবাব যে দেবে এটা ইসরায়েল আগেই স্পষ্ট করেছিল। সেই জবাব তারা দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যদিও ইরান দাবি করছে, ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়নি। দেশটির কয়েকটি ড্রোন তারা প্রতিহত করেছে।
তবে সত্যিই এটা ইসরায়েলের জবাবের শুরু এবং এটাই শেষ হয়ে থাকলে হামলার আকার বা স্থান বিবেচনায় এই জবাব খুবই সামান্য বলে মনে করেন বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার। তিনি বলেন, আকার এবং স্থান বিবেচনায় ইসরায়েলের আক্রমণ খুবই নগণ্য
বিবিসির খবরে বলা হয়, এখন পরিস্থিতি কোনদিকে গড়াবে সেটা দুটো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে: ইসরায়েলের হামলা এখানেই শেষ কি না এবং ইরান পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নেয় কি না।
ইরানের ইসলামিক রেভলিউশন গার্ড কোরের (আইআরজিসি) ঘনিষ্ঠ আধা-সরকারি তাসনিম সংবাদ সংস্থা একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে ‘ইসফাহানের পারমাণবিক কার্যক্রমের কেন্দ্র সম্পূর্ণ নিরাপদ’।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একজন ব্যক্তি ইসফাহান পারমাণবিক প্রযুক্তি কেন্দ্রের অনেকটা কাছে দাঁড়িয়ে তার ঘড়ি পরীক্ষা করছেন। তখন আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকেও দেখানো হয় যারা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি যানের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে মনে হচ্ছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি আইআরআইবি হামলার খবরটিকে গুরুত্ব দেয়নি বা খারিজ করে দিয়েছে। তারা টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। সেই ভিডিও-তে এই টিভির একজন সংবাদদাতাকে ইসফাহান শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ভবনের শীর্ষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘শহরটি নিরাপদ। মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।’
‘কয়েক ঘণ্টা আগে আকাশে শব্দ শোনা গিয়েছিল। আমরা যা জানি, তা হলো- ইসফাহানের আকাশে একাধিক মিনি-ড্রোন উড়ছিল। তখন সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।’
‘এখন পর্যন্ত, প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো তথ্য দেয়নি। কিছু গণমাধ্যম বলেছিল যে, ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের গবেষণা বলছে, এই তথ্যটি মিথ্যা, কোনো স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।’
এদিকে ইরানের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর সাইবারস্পেস’ এর পক্ষ থেকে ইরানে মিসাইল হামলার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম এক্সে সংস্থাটির মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান মন্তব্য করেছেন: ‘ইসফাহান বা দেশের অন্য কোনো জায়গায় সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো হামলা হয়নি।’
তিনি আরও লিখেছেন যে, ইসরায়েল ‘কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) পাঠানোর ব্যর্থ ও বিব্রতকর একটি প্রয়াস করেছে এবং সেসব কোয়াডকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমও একই ধরনের রিপোর্ট করেছে। তারা জানিয়েছে রাতে দেশের ভেতরের একাধিক অঞ্চলে ডিফেন্স সিস্টেম কার্যকর করা হলেও কোনো সংঘাত বা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়নি।