সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্স।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে ইইউ নেভাল ফোর্স এই তথ্য জানায়।
ইইউ নেভাল ফোর্সের এক্সে একটি ভিডিও চিত্র এবং তিনটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজের কয়েক নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে। যুদ্ধজাহাজ থেকে একটি হেলিকপ্টার জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়।
একটি ছবিতে দেখা যায়, ইইউ নেভাল ফোর্সের দুজন সদস্য যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দিকে তাকিয়ে আছেন। ইইউ নেভাল ফোর্স যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলেও কোনো অভিযানের বিষয়ে জানায়নি। এর আগে ইইউ নেভাল ফোর্স জিম্মি জাহাজটি উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মতি দেওয়া হয়নি। মূলত নাবিকদের নিরাপদ ফেরাতে কোনো সামরিক অভিযানে সম্মতি দিচ্ছে না মালিকপক্ষ।
গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী কবির গ্রুপের জাহাজটি। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে।
মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেওয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দুরে নোঙর ফেলা হয়। এরপর আবার অবস্থান বদলে আব্দুল্লাহকে নেওয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। সেখান থেকে সরিয়ে নোঙর ফেলা হয় উপকূলের মাত্র সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরে। তারপর আরও এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা নিশ্চিত করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ। কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, দস্যুদের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছে। তবে কোনো আলোচনা হয়নি। বিষয়টি স্পর্শকাতর, তাই আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
ইইউ নেভাল ফোর্সের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জলদস্যুতার ঝুঁকি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ নভেম্বর থেকে এদিন পর্যন্ত ২৫টি নৌযানে ছিনতাই ও ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে দস্যুরা। এর মধ্যে বেশির ভাগই ছোট নৌযান। বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে তিনটি। তবে সর্বশেষ শুধু বাংলাদেশি জাহাজটিই এখন সোমালিয়ার দস্যুদের কাছে জিম্মি রয়েছে।