মোঃ আশিকুর রহমান আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি :-
বর্তমানে যারা প্রবীণ বা মধ্যবয়সী, তাদের অনেকের জীবনেই শিশুকালে বাড়ির পাশের হাটে গিয়ে কাঠের টুলে বসে চুল-দাড়ি ছাঁটার অম্ল-মধুর স্মৃতি কমবেশি মনে আছে আজও। আবার অঞ্চলভেদে নামডাকের নাপিত বা নরসুন্দরের কাছে ক্ষৌরকাজের সময়ের নানা গল্পও জমা আছে অনেকের জীবনখাতার ঝুলিতে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে খোলা হাট বাজারের ঢুলে বসে গামছা ও সামনে আয়না দিয়ে নরসুন্দর কাজ হারিয়ে গেছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নে নরসুন্দরদের মধ্যে প্রয়াত সনত শীল, সোবুধ শীল, কানু শীল, চন্ডি, রঙ্গ শীল, প্রপুল্ল শীল,
কামেন্ড শীলদের মতো অনেকেই ছিলেন সেকালের নামকরা নরসুন্দর। তাদের কেউ কেউ হাটের খোলা মাঠে বাঁশের আগায় আয়না লটকে অথবা আয়না ছাড়াই ক্ষৌরকাজ করতেন। এ কারণে অনেকে তাদের ‘হাটুরে নাপিত’ বলতেন। বটতলার খোলা হাটে টুলে বসে লাল সুতি কাপড়ে আঁটসাঁট করে গেরো দিয়ে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ চুল-দাড়ি ছেঁটেছেন বছরের পর বছর ৮০ ও ৯০ দশকের বাটি ছাঁট, দিলীপ ছাঁট, হিপ্পি ছাঁট, পপ ছাঁট, বক্স ছাঁট, ইংলিশ ছাঁট, মিঠুন ছাঁট, কলেজ ছাঁটসহ নানা ডিজাইনের চুল ছাঁটার কারিগররা এখনও স্মৃতিতে রয়েছেন অনেকের। এই নিয়ে কামেন্ড শীলের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি জানান এই সব এখন স্মৃতির পাতায়, সেই সময়ের নরসুন্দর কাজের আনন্দই ছিল আলাদা এখন কাজ করে আগের মত আনন্দ পাই না।
এ সময়ের উন্নত ডেকোরেশনের এসি-নন এসি স্যালুনে চুল-দাড়ি ছাঁটার নামিদামি উপকরণ, পারফিউমের বদলে সেকালের হাতি মার্কা অথবা বিলেতি ক্ষুর, সৈয়দপুরের পাঁচতারা কাঁচি, বলাকা, শার্প, সোর্ড ব্লেড, তিব্বত শেভিং ক্রিম, মিল্লাত বা খোলা পাউডার, জীবাণুনাশক ফিটকিরি ব্যবহারে কিছুক্ষণ দুই গালে জ্বালা করার স্মৃতি কখনও-সখনও তাড়িত করে কাউকে না কাউকে।
আজকাল নারী-পুরুষের বিউটি পার্লার বা উন্নত স্যালুন প্রত্যন্ত এলাকায়ও পৌঁছে গেছে।