মোঃ সোহরাব উদ্দিন মন্ডল
কাশিমপুর,গাজীপুর
টানা তীব্র তাপদাহে সারাদেশের মতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন অন্তর্গত কাশিমপুর থানার বিভিন্ন এলাকার জনজীবন। দীর্ঘদিন বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছে না।প্রচন্ড লোডশেডিংয়ে গরমের তীব্রতা দমানোর চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে।
এই তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য আল্লাহ পাকের কাছে পানাহ চেয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন কাশিমপুরের ৩নং ওয়ার্ড ও আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা। আল্লাহর কাছে হাত তুলে বৃষ্টির জন্য ও তাপদাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মুসল্লিরা দুই হাত উল্টো করে মোনাজাতে কাঁদলেন।
রোববার সকালে ঐতিহ্যবাহী হাতীমারা ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।এতে ইমামতি ও দোয়া পরিচালনা করেন বিএডিসি মসজিদের ইমাম ও খতিব আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা আব্দুল মান্নান।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে নিম্ন আয়ের খেটেখাওয়া মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ ঠান্ডাজ্বর ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর দরবারে বৃষ্টি প্রার্থনায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ নামাজের আয়োজন করা হয়।
নামাজে অংশ নেওয়া হাতীমারার মোঃ মিলন হোসেন বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ও মোনাজাতের আয়োজন করেন এলাকাবাসী। তীব্র গরমের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শিল্প কারখানার শ্রমিকরা সারাদিন কাজ করে এসে রাতে প্রচন্ড গরমে লোডশেডিংয়ের জন্য চাহিদামতো ঘুমাতে পারে না।এতে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুকি।স্কুল,কলেজ এবং মাদ্রাসার ছেলেমেয়েদের জন্য তো এমন পরিস্থিতিতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াও অত্যন্ত কষ্টকর।
আরেক মুসল্লি আবুল হোসেন বলেন, সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একই মাত্রায় তাপ নামছে। গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মত। দুপুর গড়াতেই তাপমাত্রার পারদ গিয়ে ঠেকেছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও ওপরে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গেল কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের রাজশাহীজুড়ে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সারা দেশের মত কাশিমপুরেও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।কিন্তু এই প্রখর রোদ ও অত্যধিক তাপমাত্রার মধ্যেও আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় সন্তানদের জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহীন মোল্লা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ হাহাকার করছে। মহান আল্লাহ কোনোও কারণে আমাদের ওপরে নারাজ হয়েছেন। এ কারণে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ রেখেছেন। আজকে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের নিয়ে নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে তীব্র গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করেছি। মহান আল্লাহ আমাদের নামাজ কবুল করে রহমতের বৃষ্টি দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।