আজ ১৭ই রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস। আজকের এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে মদিনা থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের লড়াই যার নাম ‘বদরযুদ্ধ’। ইসলামের ইতিহাসে এটিই প্রথম এবং প্রধান যুদ্ধ। বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.)- এর নিয়ে আসা ধর্ম, ইসলামের বিরুদ্ধে বিশাল সৈন্যবাহিনীর মোকাবিলায় মুসলিম ইমানদার বান্দাদের নিয়ে গঠিত ছোট একটি দলের সশস্ত্র সংগ্রাম ছিল এই বদরযুদ্ধ। এছাড়া ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মুসলিম ও কুরাইশদের মধ্যে বেশ কিছু খন্ডযুদ্ধ হয়। তবে বদর ছিল দুই বাহিনীর মধ্যে প্রথম বড় আকারের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে মুসলিমরা মক্কার সৈনিকদের সারি ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয় এবং যুদ্ধে মুসলিমদের বিপক্ষের ইসলাম বিরোধীদের নেতা আবু জাহেল (আসল নাম আমর ইবনে হিশাম) উতবা ইবনে রাবিয়া, উমাইয়া ইবনে খালাফ, শায়বা ইবনে রাবিয়া, ওয়ালিদ ইবনে উতবা, উক্ববা ইবনে আবি মুইত নিহত হয়। এছাড়া এই যুদ্ধে ৭০ জন কাফের নিহত ও ৭০ জন বন্দী হয়। অন্যদিকে মাত্র ১৪ জন মুসলিম বীর সেনা শহীদ হন।
এই ঐতিহাসিক যুদ্ধের পর মুসলিমদের বিজয়ে অন্যদের কাছে বার্তা পৌছায় যে মুসলিমরা আরবে নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং এর ফলে নেতা হিসেবে মুহাম্মাদের অবস্থান দৃঢ় হয়। এছাড়া এই বিজয় মুসলিমদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা মুসলিমের কাছে অত্যন্ত গৌরবের। যুদ্ধ জয়ের ফলে মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসেবে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কর্তৃত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। যার ফলে অন্য আরব গোত্রগুলি মুসলিমদেরকে নতুন শক্তি হিসেবে দেখতে শুরু করে। মদিনার অনেকে এই সময় ইসলাম গ্রহণ করে এবং বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলিমদেরকে খুবই সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা হয়। প্রতিবছর ১৭ রমজান এলেই বিশ্ব মুসলিম শ্রদ্ধা ও গৌরবের সঙ্গে বদরের এই মহান বিজয় এবং যুদ্ধে শহীদদের অত্যন্ত গভীরভাবে স্মরণ করে। ইসলামের এই সাফল্য এবং ত্যাগের শিক্ষায়, সত্য ও ন্যায়ের পথে ঈমানদার মুসলিমদের অবিচল থাকার অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছে।
লেখক: কামরান চৌধুরী, কবি ও কথাসাহিত্যিক